কিভাবে মেদিনীপুরকে পিছনে ফেলে রেলশহর হিসাবে গড়ে উঠলো খড়্গপুর। খড়্গপুরকে নিয়ে কিছু জানা অজানা তথ্য। - দেখবো এবার জগৎটাকে (Dekhbo ebar jogot-ta-ke: A Bengali Blog)

Dekhbo Ebar Jogot-ta-ke is a bengali blog about some unknown interesting facts

WE ARE RECRUITING CONTENT WRITER. CONTACT: 7003927787

Friday, June 8, 2018

কিভাবে মেদিনীপুরকে পিছনে ফেলে রেলশহর হিসাবে গড়ে উঠলো খড়্গপুর। খড়্গপুরকে নিয়ে কিছু জানা অজানা তথ্য।

পৃথিবীর দীর্ঘতম রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম হিসাবে খড়্গপুরের নাম একসময় বেশ পরিচিত ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই রেকর্ডের তকমাও চলে গেছে অন্য ষ্টেশনের নামের পাশে। তা সত্ত্বেও খড়্গপুরের গুরুত্বে এতটুকু ভাঁটা পড়েনি।





  দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর সাবডিভিশনের অন্তর্গত খড়্গপুর ষ্টেশনটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় অবস্থিত। ১০ প্ল্যাটফর্ম বিশিষ্ট এই ষ্টেশনের ওপর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৭৫টি ট্রেন যাওয়া আসা করে। রেলের দক্ষিণ পূর্ব শাখায় এই ষ্টেশনের গুরুত্ব বিবেচনা করে একে  ' GATEWAY OF SOUTH EASTERN RAILWAY' আখ্যা দেওয়া হয়। বলাবাহুল্য, রেল মানচিত্রে উজ্জ্বল নক্ষত্রের ন্যায় স্থান করে নেওয়া রেলশহর খড়্গপুরের ছায়ায় মেদিনীপুর ষ্টেশনটি একপ্রকার দুয়োরানী হয়ে রয়ে গেছে। কিন্তু ইতিহাস মতে পরিবেশ পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে হওয়ার কথা ছিল ঠিক উল্টোটা। অর্থাৎ খড়্গপুরের বদলে রেলশহর হিসাবে নিজেকে মেলে ধরার কথা ছিল মেদিনীপুরের। খড়্গপুর কিভাবে মেদিনীপুরকে পিছনে ফেলে রেলশহর হিসাবে পরিচিতি লাভ করল, আসুন জেনে নেওয়া যাক। 




ব্রিটিশ শাসকেরা তৎকালীন বোম্বাই নগরীর সাথে কলকাতাকে রেলপথে যুক্ত করতে চাইলেন। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল মেদিনীপুর হবে জংশন ষ্টেশন। কিন্তু বেঙ্গল নাগপুর রেলওয়ে কোম্পানির (B.N.R.) আধিকারিকরা হিসেব করে দেখেন যে মেদিনীপুরের বদলে খড়্গপুরে জংশন ষ্টেশন বানালে লাভ বেশি। খড়্গপুরের পাথুরে জমিতে ঘরবাড়ি বানানোর খরচ কম হবে, কাঁসাই নদীর ওপর ডবল লাইনের সেতু তৈরির খরচও বেঁচে যাবে। তাছাড়া ঘন জঙ্গলে পূর্ণ খড়্গপুরের গাছ থেকে পাওয়া কাঠও কাজে লেগে যাবে রেল লাইন পাতার কাজে, এবং ঘরবাড়ি তৈরির কাজেও লাগবে। আজকের খড়্গপুরকে দেখে  এর জঙ্গুলে অতীত অনুধাবন করা মোটেই সহজসাধ্য কাজ নয়। এমনকি উনিশ শতকের শেষের দিকেও খড়্গপুর ছিল ঘন জঙ্গলে ভরা।
১৯০১ সালে তৈরি হল জংশন ষ্টেশন। তখনও সেখানকার জনবসতি মেরেকেটে সাড়ে তিন হাজার জনের। এখন তো সেই খড়্গপুর মিনি ইন্ডিয়া তে পরিনত হয়েছে।




ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে যখন প্রথম রেল ইঞ্জিন এসে পৌঁছালো  খড়্গপুরে, ভয়ে সবাই এদিক সেদিক ছুটে পালালো। এই ভয় বহুদিন পর্যন্ত ছিল। গাঁয়ে গাঁয়ে লোক পাঠানো হল ভয় ভাঙানোর জন্য। এমনকি বিনা পয়সাতেও চাপার সুযোগ দেওয়া হত। রেলের সাহেবদেরও আদি বাসিন্দারা ভালোভাবে নেননি। রেলের জন্য অনেকে ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছিলেন, জঙ্গলের অধিকার হারিয়েছিলেন। অনেকে আবার রেলগাড়িতে চড়তে চাইতেন না সেতু ভেঙে নদীতে পড়ে যাওয়ার ভয়ে, অনেকে চড়তেন না একই কামরায় সবার সাথে যাত্রা করে জাত যাওয়ার ভয়ে।




১৯১১ সালের মধ্যে খড়্গপুর পুরোদস্তুর রেলশহর হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। পরে একে একে গড়ে উঠলো পৌরসভা, আই. আই. টি. । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কলাইকুন্ডার জঙ্গল এলাকায় তৈরি করা হয় বিমানঘাঁটি। অহল্যাবাঈ রোড  সম্প্রসারিত করে গড়ে উঠলো ' ওডিশা ট্র্যাঙ্ক রোড'। বাংলা-ওডিশা যোগাযোগ বাড়ায় খড়্গপুর মেদিনীপুর বাজার এলাকায় পরিনত হয়।

লোকমতে খড়গেশ্বর শিবের নামানুসারে এই এলাকার নাম হয়েছিল খড়্গপুর। আরও শোনা যায় যে রেল লাইন পাতার সময়ে নাকি রোজ রাতে হাতির পাল এসে লাইন উপড়ে দিয়ে যেত। এই দেখে রেলের ইঞ্জিনিয়াররা সেখানে উঁচু সেতু তৈরি করে দেন, যাতে হাতিরা সহজে নিচ দিয়ে গলে যেতে পারে । সেই থেকে এই সেতুর নাম হয় হাতি গলা পুল।

এই প্রতিবেদনটি আপনাদের কেমন লাগলো নিচে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করুন।

[ আরও পড়ুনঃ বিধান চন্দ্র রায় মাত্র এক টাকায় কিনেছিলেন আজকের সল্টলেক। সল্টলেক সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য। ]

[ আরও পড়ুন ঃ জানা অজানা রবীন্দ্রনাথ। ]

[ আরও পড়ুন ঃ'দাদা সাহেব ফালকে' পুরস্কার পেয়েও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। কেন জানেন? ]

[আরও পড়ুন ঃ ট্রেন-এ শৌচালয় অন্তর্ভুক্তির পিছনে অবদান কার জানেন? ]


তথ্যসুত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা

8 comments:

  1. ETA TOH SEI LAGLO RE.CHALIYE JAA

    ReplyDelete
    Replies
    1. thanks vai for your valueable comment! Share <3

      Delete
  2. Replies
    1. Dhonnobad. Bondhu der satheo share koro ar poroborti post er update pete amader Facebook page e like koro

      Delete
  3. ভাল লাগল খড়গপুরের ইতিহাস। তথ‍্যসমৃদ্ধ লেখা! কখনো খড়গপুর আইআইটি গড়ে ওঠার ইতিহাস জানলে ভাল শাগবে। কলকাতায় না হয়ে খড়গপুরে হল কেন এটা একটা প্রশ্ন।

    ReplyDelete
    Replies
    1. পরবর্তী কোনো পোস্টে দেওয়ার চেষ্টা করব।

      Delete
  4. Very nice to read the history of Kharagpur,now it should be more developed by smart city.

    ReplyDelete