জানেন কি রসগোল্লার কলম্বাস কাকে বলা হয় ? - দেখবো এবার জগৎটাকে (Dekhbo ebar jogot-ta-ke: A Bengali Blog)

Dekhbo Ebar Jogot-ta-ke is a bengali blog about some unknown interesting facts

WE ARE RECRUITING CONTENT WRITER. CONTACT: 7003927787

Sunday, June 10, 2018

জানেন কি রসগোল্লার কলম্বাস কাকে বলা হয় ?

ভাত মাছ ছাড়াও  যদি বাঙালীদের কোনো কিছু দিয়ে বর্ণনা করা যায় তা হল রসগোল্লা । কিন্তু জানেন কি কিভাবে এর উৎপত্তি ? আর সুস্বাদু এই নরম ছানার মিষ্টি তৈরির পেছনে কার অবদান আছে ? এবং যিনি এই মিষ্টিকে জগৎজোড়া খ্যাতি এনে দিয়েছিলেন কেনই বা তাঁকে "রসগোল্লা'র কলম্বাস" উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে ? তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক ।


ছানার তৈরী রসগোল্লা 

বাঙালীদের সাথে ইতিহাস বরাবরই ওতপ্রোতভাবে জড়িত । তাই এই রসগোল্লা তৈরির পেছনেও যে একটা রসালো ইতিহাস জড়িয়ে আছে তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে !


বলা হয় যে ১৪৯৮ সালেভাস্কো দা গামা  ভারতে পদার্পণ করার পর থেকেই
পর্তুগীজ ব্যবসায়ীদের সাথে বাঙালি ব্যবসায়ীদের সম্পর্ক বেড়ে ওঠে। এদিকে পর্তুগীজদের পনির খুব পছন্দের খাবারগুলোর মধ্যে একটি ছিল। বাঙালি ব্যবসায়ীরা ক্রমে ক্রমে তা জানতে পারে এবং ছানা তৈরী করতে শেখে । ছানার চাহিদা বাড়তে থাকায় দুধ কেটে ছানা তৈরী যেন নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে উঠলো ।

ভোজনরসিক বাঙালীদের নতুন খাবারের প্রতি আকর্ষণ আজন্মের। এই ছানা তৈরির অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই ১৮৬৬ নবীন চন্দ্র দাশ নামের এক ময়রা বানিয়ে বসলেন এক আশ্চর্য মিষ্টির ! কথা ছিল গোল্লা বানানোর কিন্তু আমাদের নবীন বাবু গোল্লা বানাতে এতটাই মগ্ন ছিলেন যে এক খেয়ালে গোল্লা হাত থেকে ফস্কে গিয়ে পড়লো রসে,আর এই থেকেই সৃষ্টি হয় নরম তুলতুলে আর রস সমন্বয়ে এ যেন এক আশ্চর্য ব্যাঞ্জন,যা বাঙালির তথা ভারতবর্ষের মিষ্টির ইতিহাসে একদমই নতুন মোড় সৃষ্টি করে ।


কিন্তু নবীন চন্দ্র দাশ এর এখনো "রসগোল্লা'র কলম্বাস" হয়ে ওঠা বাকি ছিল। মিষ্টি আবিষ্কার করে ফেললেও এখনো অব্দি কমসংখ্যক গ্রাহকই জানতেন এই নতুন তৈরী মিষ্টির কথা । কিন্তু সুদিনের আসা ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা মাত্র ।


নবীন চন্দ্র  দাশ 

একদিন হঠাৎ বাংলার এক স্বনামধন্য মাড়ওয়ারী জৈনিক ব্যবসায়ী ভগবানদাস বগলা ছেলে পুলেদের সাথে উঠলেন নবীন ময়রার দোকানে মিষ্টির স্বাদ নিতে। ব্যস আমাদের নবীন ময়রা খাওয়ালেন তার আশ্চর্য মিঠাই । গলাধঃকরণ করতে না করতেই তিনি বুঝতে পারলেন এই মিষ্টির কি মহিমা । এই ভগবানদাস বগলা মহাশয়ই পরবর্তীকালে একের পর এক বড় বড় মাপের অর্ডার দিয়ে রসগোল্লা আনতে লাগলেন নবীন ময়রার দোকান থেকে এবং আত্মীয় পরিজনের মধ্যে নবীন বাবুর মিষ্টির সুনাম করতে লাগলেন । ক্রমে ক্রমে রসগোল্লার আবিস্কারকর্তা হিসেবে দেশে বিদেশে নবীন চন্দ্র দাশ বিখ্যাত হয়ে উঠলেন । আর এই ভাবেই আবির্ভাব ঘটলো আমাদের "রসগোল্লা'র কলম্বাসের"



বিঃদ্রঃ-রসগোল্লা সম্পর্কে যখন এত কিছু জানলেনই তখন একটা বিষয়ে অবশ্যই আপনাদেরকে ওয়াকিবহাল করাটা জরুরী । আপনারা হয়তো নিশ্চয়ই জানেন সম্প্রতি বেশ কিছুদিন আগে অবধি রসগোল্লা কার এই নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয় । এই বিষয়টি নিয়ে ভারত সরকার GEOGRAPHICAL INDICATIONS REGISTRY ডিপার্টমেন্টকে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয় । বাংলা ও ওড়িশার ইতিহাসবিদরা উঠে পড়ে লেগে যান আসলে রসগোল্লা তৈরির পেছনে কাদের অবদান সব থেকে বেশি । এমনকি ওড়িশাবাসী লেগে পড়েন ''রাসগুল্লা দিবস'' পালন করার জন্য । কিন্তু দীর্ঘ ২ বছর পর সার্ভে রিপোর্ট বেরিয়ে এলে পরে জানা যায় যে রসগোল্লা (ROSOGOLLA/ROSSOGOLLA) আসলেই বাংলা শব্দ । আর আমরা রসগোল্লাকে নিয়ে গর্ব করি আসলে তা আমাদেরই দান মিষ্টির ইতিহাসে । ওড়িশাবাসী যে রসগোল্লাকে নিয়ে মাতামাতি করছিল আসলে তার নাম 'পাহালা রাসগুল্লা' । তাই সর্বশেষে বাঙালির রসগোল্লা বাঙালীদেরই রইল কিন্তু এবার তার সাথে সরকারি অনুমোদনও রইল ।



এই প্রতিবেদনটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই নীচে কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না । আর অবশ্যই সকলের সাথে শেয়ার করে জানার আনন্দকে দ্বিগুণ করে তুলুন ।



[ আরও পড়ুনঃ বিধান চন্দ্র রায় মাত্র এক টাকায় কিনেছিলেন আজকের সল্টলেক। সল্টলেক সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য। ]


[ আরও পড়ুন ঃ জানা অজানা রবীন্দ্রনাথ। ]

[ আরও পড়ুন ঃ'দাদা সাহেব ফালকে' পুরস্কার পেয়েও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। কেন জানেন? ]


[আরও পড়ুন ঃ ট্রেন-এ শৌচালয় অন্তর্ভুক্তির পিছনে অবদান কার জানেন? ]

No comments:

Post a Comment