July 2018 - দেখবো এবার জগৎটাকে (Dekhbo ebar jogot-ta-ke: A Bengali Blog)

Dekhbo Ebar Jogot-ta-ke is a bengali blog about some unknown interesting facts

WE ARE RECRUITING CONTENT WRITER. CONTACT: 7003927787

Sunday, July 15, 2018

স্টোনম্যান সিরিয়াল কিলার : যে কখনো ধরা পড়েনি !

July 15, 2018 0
স্টোনম্যান সিরিয়াল কিলার : যে কখনো ধরা পড়েনি !

অনেক রাত করে আপনি হয়তো বাড়ি ফিরছেন ফাঁকা রাস্তা দিয়ে খোশ মেজাজে । কিন্তু এর মেয়াদ হতে পারে খুবই অল্প । আপনার আসে পাশেই হয়তো ওঁত পেতে আছে এক রহস্যজনক আততায়ী ! এবং তার পরবর্তী শিকারটি হয়তো আপনিই । কিছু বুঝে ওঠবার আগেই আপনার উপরে এসে পড়তে পারে একটি বড় পাথর আর আপনি নিমেষে চোখে অন্ধকার দেখবেন।

.
.
কি ? ঢোঁক গিলছেন বুঝি ? ভয় তো লাগারই কথা । কিন্তু জানেন কি এইরকম ঘটনা স্বয়ং কলকাতা'র বুকে ঘটে গেছে ? রাতের পর রাত পুলিশ প্রশাসনের চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলো এই রহস্যজনক আততায়ী ।  কিন্তু  কি এই রহস্য এবং কে এই স্টোনম্যান  আর কেনই বা এই রহস্যের সমাধান আজও হতে পারেনি ? মনের প্রশ্ন চিহ্ন গুলি মিটিয়ে ফেলতে পড়ে ফেলুন এই নিবেদনটি।




ঘটনার সূত্রপাত ঘটে গত শতাব্দীর শেষ দশকের দিকে অর্থাৎ ১৯৮৫ সালে ।  পথচারীদের মনে ভয় জাগানোর মত ঘটনা ঘটলো সবার অখেয়ালে । বিন্দুমাত্র খোঁজ নেই কারুর কাছেই অথচ একটার পর একটা রহস্যজনক মৃত্যুর  ঘটনা কানে আসতে লাগলো  মুম্বাই পুলিশের। পর পর ১২ জনের মৃত্যু হয় । প্রত্যেক দিন ভোরবেলা পাওয়া যাচ্ছিল থেতলানো মাথার অসাড় শরীর । বিষয়টি প্রচণ্ড ভাবে নাড়া দেয় মুম্বাই পুলিশের বড় কর্তাদের । মোতায়েন করা হয় পুলিশবাহিনী । সাধারন মানুষ ঘর থেকে বেরনো বন্ধ করে দেয় রাত ১০ টার পর । ঘটনার তদন্ত করে কিছু আশ্চর্য জিনিস পুলিশের নজরে আসে । সেগুলি হল-----


  1. প্রত্যেকটি মৃত্যু ঘটে গভীর রাত্রে যখন সবাই ঘুমের ঘোরে আচ্ছন্ন । 
  2. সবাইকে মারার ক্ষেত্রে যে অস্ত্রটি ব্যবহার করা হয় তা হল আস্ত একটি ৩০ কেজির পাথর ! আর তাতে করেই আঘাত হানা হয় ।
  3. আর যাদের মৃত্যু ঘটে তারা সকলেই ফুটপাথবাসি ।


    তবে এই ঘটনার পেছনে কে বা কাদের হাত ছিল তার কিনারা আর হয়ে ওঠেনি । ধরা পড়েনি সিরিয়াল  কিলারটি । বিষয়টি সময়ের সাথে সাথে মানুষজন ভুলে যায় এবং মুম্বাইয়ের জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে আসে ।


    কিন্তু ঘটনার শেষ এখানেই নয় । যেন ফিল্মি ভাষায় "পিকচার আভি বাকি হ্যাঁয়"।

    টার্গেট এবার কিন্তু খোদ আমাদের কোলকাতা । মুম্বাই ঘটনার রেষ কাটতে না কাটতেই ঠিক বছর চারেক পর ১৯৮৯ তে কানে এল মানুষ মরার ঘটনা । এবার তাঁর শিকার রাস্তার মানুষ, অসহায় ভিখারি,পাগল এবং রিক্সা চালক যারা এই শহরের আবর্জনাকে মাথায় বিছানা বানিয়ে ঘুমতো । যেমন লন্ডনের জ্যাক দ্যা রিপার, বোস্টন শহরের কুখ্যাত শ্বাসরোধকারী খুনি তেমনই ৩০০ বছরের ঐতিহ্যশালী কোলকাতাতেও এবার যেন এসে পড়েছিল রহস্যজনক স্টোনম্যানের ছায়া । যার ভয় সবাইকে দিনে দুপুরেও তাড়া করে বেড়াচ্ছিল। রাস্তায় সমান ভাবে পাওয়া যেতে লাগলো মৃতদেহ । তবে এবার এ ১২ টি নয় পাওয়া গেল ১৩ টি মৃতদেহ। স্টোনম্যানের প্রথম শিকার হয় রাস্তার ধারে দেশি মদ বিক্রি করে জীবন চালানো এক মহিলা । দ্বিতীয় শিকার হয় পথভ্রষ্ট এক ভিখারি কিন্তু  সবথেকে আশ্চর্য বিষয় হলো ইনি মারা যান প্রথম মৃত্যুর ঠিক একমাস পর । ঘড়ির কাঁটাতে যেন নিয়ম করে ঠিক করে দেওয়া ছিল একদম একমাস পরেই পরবর্তী শিকার করা হবে । 

    পদ্ধতি এবারেও এক । মাথায় আঘাতের চিহ্ন,দেহের পাশে সেই রক্তাক্ত বড় পাথর ।  

    তদন্তে নামে কোলকাতা পুলিশ । এতে পুলিশ অনুমান করে আততায়ীর উচ্চতা কম করে ৬.২ ইঞ্চি । সন্দেহভাজন কয়েকজন ব্যক্তিকে তুলে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় । কিন্তু এক্ষেত্রেও কোনো কূলকিনারা খুঁজে পায়নি তৎকালীন লালবাজারের বড়কর্তারা । বুঝে উঠতে পারেনি আততায়ী ঘটনাটি একাই ঘটিয়েছে নাকি দল বেঁধে । যদিও শোনা যায় নাকি এক উন্মাদকে ধরে এনে কোলকাতা পুলিশ তাকে স্টোনম্যানের আখ্যা দেয় । 

    সম্প্রতি সৃজিত মুখার্জি পরিচালিত বাংলা ছায়াছবি "২২ শে শ্রাবণ" এইরকমই ঘটনার উপর চিত্রিত ।   
    এছাড়াও "দ্যা স্টোনম্যান মার্ডারস" নামের হিন্দি সিনেমাটি সম্পূর্ণভাবে এই সত্য ঘটনাকে কেন্দ্র করেই । 

    সিরিয়াল কিলার স্টোনম্যান রহস্য শেষমেশ একটা মিসট্রি হয়েই রয়ে গেছে । আর এই অসমাধিত রহস্য কিন্তু তৎকালীন পুলিশ এবং প্রশাসনের ব্যর্থতাকে আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দেয় । 

    --------------------------------------------------------------------------------------------------

    এই প্রতিবেদনটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই নীচে কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না । আর অবশ্যই সকলের সাথে শেয়ার করে জানার আনন্দকে দ্বিগুণ করে তুলুন ।


    [ আরও পড়ুনঃ বিধান চন্দ্র রায় মাত্র এক টাকায় কিনেছিলেন আজকের সল্টলেক। সল্টলেক সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য। ]


    [ আরও পড়ুন ঃ জানা অজানা রবীন্দ্রনাথ। ]

    [ আরও পড়ুন ঃ'দাদা সাহেব ফালকে' পুরস্কার পেয়েও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। কেন জানেন? ]



    [আরও পড়ুন ঃ ট্রেন-এ শৌচালয় অন্তর্ভুক্তির পিছনে অবদান কার জানেন? ]






    Saturday, July 7, 2018

    ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের আগে এখানে ছিল একটি জেলখানা। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য।

    July 07, 2018 0
    ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের আগে এখানে ছিল একটি জেলখানা। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সম্পর্কে অজানা কিছু তথ্য।
    পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী তথা বাণিজ্য নগরী কলকাতার কথা বললে যে কয়েকটি স্থাপত্য ভাস্কর্যের কথা মাথায় আসে, তার মধ্যে প্রথম নামটি অবধারিত ভাবে হয় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল বা হাওড়া ব্রীজ। আজকের আমাদের এই প্রতিবেদনটি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এর ওপর ভিত্তি করে তৈরি। এই স্মৃতিসৌধটি রানী ভিক্টোরিয়ার স্মৃতিরক্ষার্থে তৈরি তা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু এর পিছনেও লুকিয়ে রয়েছে অনেক না জানা ইতিবৃত্ত যা এই প্রতিবেদনের উপজীব্য। 



       যদি বলি, বর্তমানে যেখানে রানী ভিক্টোরিয়ার স্মৃতিসৌধটি মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে কয়েক দশক আগেও ছিল দাগী আসামীদের কারাগার তাহলে কি খুব অবাক হবেন? অবাক হলেও এটাই বাস্তব!

       ১৭৬৭ সালে কলকাতায় দুটি মাত্র জেলখানা ছিল, একটি ছিল লালবাজারে এবং অপরটি বড়বাজারে। একটি ছিল Petty Crime বা লঘু অপরাধের জন্য, অপরটি Serious Crime বা ঘৃণ্য অপরাধের জন্য। তখন ইংরেজ শাসকরা যে হারে যথেচ্ছ ধরপাকড় করতেন তাতে জেলের জায়গা সংকুলান হয়ে পড়ায় ১৭৭৮ সালে প্রেসিডেন্সি জেল তৈরি করা হয় ঠিক সেখানে, যেখানে এখন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল। স্থানীয় লোকেদের কাছে এই জায়গাটি 'হরিণবাড়ি' নামে পরিচিত ছিল। কথিত আছে এখানে নাকি নবাব সিরাজ-উদ্-দৌল্লা হরিণ শিকার করতে আসতেন। এই জেলটি উচ্চ শ্রেণীর কয়েদিদের জন্য ব্যবহার করা হত। এমনকি এই জেলে কয়েদিদের সাথে তাদের বাড়ির লোকের থাকারও বন্দোবস্ত ছিল। এই জেলের অন্যতম উল্লেখযোগ্য একজন কয়েদি ছিলেন 'বেঙ্গল গেজেট' পত্রিকার জনক জেমস অগাস্টাস হিকি। পরবর্তীকালে প্রেসিডেন্সি জেল ১৯০৬ সালে আলিপুরে স্থানান্তরিত করা হয় এবং প্রেসিডেন্সি জেল ভেঙে রানীর স্মৃতিসৌধকে জায়গা ছেড়ে দেওয়া হয়। 

    [ আরও পড়ুন ঃ আন্দামানের ইতিকথা ]

    [ আরও পড়ুন ঃ প্রত্যাখ্যাত শাহেনশাহ্]

    আরও পড়ুন ঃ একটু দেরী, পন্ডিচেরী।]

    [ আরও পড়ুন ঃ জানা অজানা রবীন্দ্রনাথ। ]

        ১৯০৬ সালে ওয়েলস এর রাজকুমার এই স্মৃতি সৌধের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯০১ সালে রানীর অন্তর্ধানের পর ঠিক হয় সারা ভারত জুড়ে রানীর স্মৃতি রক্ষার্থে ছোট ছোট সৌধ নির্মাণ করা হবে। কিন্তু তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড কার্জন স্থির করেন কলকাতার বুকে একটি সুবিশাল স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করবেন যা হার মানাবে তাজমহলের ঔজ্জ্বল্য আর স্থাপত্যশৈলীকে।



       যেমন ভাবা তেমন কাজ। স্থাপত্য কাজের দায়িত্ব বর্তায় ' Royal Institute of British Architect' এর সভাপতি উইলিয়াম এমারসন এর ওপর এবং নির্মাণ কাজের দায়িত্ব ন্যস্ত হয় কলকাতা ভিত্তিক কোম্পানি ' মার্টিন অ্যান্ড কোম্পানি' এর ওপর। সুদূর রাজস্থান থেকে ২০০,০০০ ঘনফুট মাক্রানা মার্বেল নিয়ে আসা হয়, যেই মার্বেল ব্যবহার করা হয়েছিল তাজমহল তৈরিতে। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হল যে সৌধটি তৈরিতে প্রয়োজন প্রায় ৭৬ লাখ টাকা তোলা হয়েছিল ভারতের সাধারন জনগনের পকেট থেকে। এর থেকেই ছবিটা স্পষ্ট যে সেই সময় ইংরেজরা কিভাবে ভারতের সাধারন মানুষদের লুঠ করেছিলেন।


        ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের পর বিভিন্ন ইংরেজ প্রশাসকদের মূর্তি সরিয়ে সেই স্থানে ভারতীয় বিখ্যাত ব্যক্তিদের মূর্তি বসানোর কাজ শুরু হয়। সরিয়ে ফেলা সেই সব মূর্তির বেশিরভাগ স্থান পায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের বাগানে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জেমস আউটরামের মূর্তি, যেটি পূর্বে পার্কস্ট্রীট ও চৌরঙ্গী ক্রসিং-এ শোভা পেত। ১৯৫৮ সালে সেই জায়গায় স্থান পায় মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি। 


    প্রতিবেদনটি আপনাদের কেমন লাগলো নিচে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করুন। পরবর্তী পোষ্টের নোটিফিকেশান পেতে ব্লগটি ফলো অপশনে ক্লিক করুন।

    [ আরও পড়ুন ঃ'লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন'- কে এই গৌরী সেন?]

    [ আরও পড়ুন ঃ'দাদা সাহেব ফালকে' পুরস্কার পেয়েও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সুচিত্রা সেন। কেন জানেন? ]

    [আরও পড়ুন ঃ ট্রেন-এ শৌচালয় অন্তর্ভুক্তির পিছনে অবদান কার জানেন? ]