ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে বিরল নজির - সিনেমার জন্য তৈরি হল আস্ত একটা ভাষা - দেখবো এবার জগৎটাকে (Dekhbo ebar jogot-ta-ke: A Bengali Blog)

Dekhbo Ebar Jogot-ta-ke is a bengali blog about some unknown interesting facts

WE ARE RECRUITING CONTENT WRITER. CONTACT: 7003927787

Saturday, February 8, 2020

ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে বিরল নজির - সিনেমার জন্য তৈরি হল আস্ত একটা ভাষা

ভারতীয় সিনেমার সুদীর্ঘ ইতিহাসে নানাবিধ অবাক করা কাণ্ড আমাদের নজরে এসেছে। সিনেমা কে পর্দায় বাস্তবের মত ফুটিয়ে তুলতে অভিনেতা - নির্মাতারা চেষ্টার কসুর করেন না। চরিত্রের সাথে আত্মস্থ করার জন্য অভিনেতাদের নিজেকে মাসের পর মাস ঘরবন্দি রাখা, নিজের জীবন বাজি রেখে মারপিটের দৃশ্যে অভিনয় করা থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভারী প্রস্থেটিক মেক- আপ নিয়ে অভিনয় করার কথা আকছার শোনা যায়। কিন্তু সিনেমার প্রয়োজনে আস্ত একটা ভাষা সৃষ্টির নজির ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে বিরল, আর এই নজির সৃষ্টি করে যেই সিনেমা ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে সেই সিনেমার নাম আমাদের সকলের অত্যন্ত পরিচিত। সিনেমাটি হল দক্ষিনী সিনেমা "বাহুবলি"। 

   দুই ভাগে তৈরি সিনেমাটির প্রথম ভাগ মুক্তির আগেই 'ব্লকব্লাস্টার' আখ্যা পেয়ে যায়। চারটি ভাষায় মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি প্রথম তিন দিনেই ১৬০ কোটি টাকার ব্যাবসা করে। এহেন তথ্য থেকেই বাহুবলির জনপ্রিয়তা আঁচ করা যায়। নির্মাতাদের থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে সিনেমাটি তৈরি করতে প্রায় তিন বছর সময় লাগে, শুধুমাত্র সেট তৈরি করতেই আনুমানিক ২০০ দিন সময় লাগে যা গড়ে ওঠে ২০০ একর জমির ওপর, সিনেমায় প্রায় ৮০০০ জুনিয়র আর্টিস্ট  কাজ করেছিল। এগুলি হল বাহুবলি সম্পর্কিত  বহু বিস্ময়কর তথ্যের  মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু তথ্য। 

বাহুবলি সিনেমার সেট


কিন্তু এই সমস্ত তথ্যের থেকেও যে ঘটনা এই সিনেমাকে আর পাঁচটা সিনেমা থেকে আলাদা করেছে এবং ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে দিয়েছে, তা হল সিনেমার উপজাতি চরিত্র 'কালকেয়া'- র জন্য সম্পূর্ণ নতুন এক ভাষা তৈরি করা হয়। নতুন এই ভাষার নাম দেওয়া হয়েছিল 'কিলিকিলি' এবং এই ভাষায় ছিল ৭৫০ টা শব্দ এবং ৪০ টা ব্যাকরনগত নিয়ম। বিদেশি ছায়াছবিতে আগেও নতুন ভাষা সৃষ্টির নজির রয়েছে, যেমন ' দ্য লর্ড অফ দ্য রিংস' সিরিজের জন্য তৈরি 'এল্ভিস' ভাষা, জর্জ মারটিন্স এর 'আ সং অফ আইস অ্যান্ড ফায়ার'  সিরিজের জন্য 'ডথরাকি', ' ভালেরিয়ান' ভাষা। 

বাহুবলি সিনেমার উপজাতি চরিত্র 'কালকেয়া'


 কাল্পনিক এই ভাষা তৈরির কারিগর মদন কারকি, যিনি এই সিনেমার তামিল সংস্করণ এর জন্য গান ও সংলাপও লিখেছেন। কারকি অস্ট্রেলিয়া তে পি.এইচ.ডি. করার সময় অতিরিক্ত আয়ের জন্য বাচ্চা দেখভালের কাজ করতেন। এমনই একদিন দুই বাচ্চাকে নতুন ভাষা শেখানোর জন্য মজার ছলে নতুন এক ভাষা তৈরি করে বসলেন। সেই ভাষার নাম দেন 'ক্লিক', এবং প্রায় ১০০ টা শব্দ তৈরি করেন, যেমন ক্লিক ভাষায় 'মিন' শব্দের অর্থ 'আমি' এবং 'নিম' শব্দের অর্থ 'তুমি'। এমনকি কারকি সেই ভাষায় গান ও রচনা করেন। কালক্রমে তিনি নানা কাজের মাঝে এই ভাষার কথা ভুলে যান। 

মদন কারকি
পরবর্তীকালে বাহুবলি সিনেমার পরিচালক এস এস রাজামৌলী কারকি কে কালকেয়া চরিত্রের জন্য নতুন ভাষা সৃষ্টির পরিকল্পনা ব্যক্ত করলে কারকি তাকে ক্লিক ভাষার গল্প বলেন। রাজামৌলী  সাহেবের সেই ভাষা খুব ভালো লেগে যায়। 

পরিচালক রাজামৌলী 


সিনেমার প্রয়োজনে ক্লিক ভাষায় কিছু পরিমার্জন করা হয়। এই ভাবেই জন্ম হল 'কিলিকিলি' ভাষার। 

বাহুবলি সিনেমার অডিও প্রকাশের দিন কাল কেয়া চরিত্রে অভিনয় করা প্রভাকর কিলিকিলি ভাষা বলার একটি ভিডিও রইল আপনাদের জন্যঃ

 প্রতিবেদনটি আপনাদের কেমন লাগলো নিচে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করুন। এইরকম প্রতিবেদন আমাদের ব্লগে লেখার জন্যে যোগাযোগ করুন dejogot@gmail.com







2 comments: